এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করার ফলে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে: এশিয়ার বাজারে


বাংলাদেশের কণ্ঠ ডেস্ক প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৩, ২০২৩, ১:০৫ অপরাহ্ন /
এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করার ফলে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে: এশিয়ার বাজারে

আজকালের কন্ঠ ডেস্ক: চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম ছয় মাসে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে এশিয়ার প্রধান প্রধান বাজারে। তবে মন্দার কারণে ইউরোপ আমেরিকায় রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করার ফলে অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি জুলাই-ডিসেম্বর মাসে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৯ শতাংশ বেড়ে ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ২৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৮ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, বিজিএমইএর গৃহীত পোশাক কূটনীতির উদ্যোগের সুফল পাচ্ছেন দেশের রপ্তানিকারকরা। এশিয়ার বাজারে রপ্তানি বাড়াতে বিজিএমইএর প্রতিনিধি দল বেশ কয়েকবার ভারত ও কোরিয়া সফর করেছে।
তিনি আরও বলেন, এশিয়ার দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এটা খুবই ভালো দিক। কিন্তু মন্দার কারণে ইউরোপ ও আমেরিকায় আমাদের রপ্তানি লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। তারপরও এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়ায় লোকসান কিছুটা হলেও কমবে। এখন বিশ্বব্যাপী করোনার চেয়েও খারাপ অবস্থা। জ্বালানি সংকটে কারখানা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে গেছে। গত ২০-৩০ বছরে এত বড় সংকট তৈরি হয়নি। এবার যেটা চলছে। জ্বালানির বিকল্প চিন্তা করতে হবে।

বিজিএমইএ সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে মন্দার কারণে ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেও কাজ করছে। ২০০৯ সাল থেকে অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে বিজিএমইএ। সরকার এবং বিজিএমইএর অব্যাহত প্রচেষ্টার কারণে অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি ২০০৯ সালের ৭ শতাংশ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

ইপিবির তথ্য মতে, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে জাপানে পোশাক রপ্তানি ৪২ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৭৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের তুলনায় চীনে পোশাক রপ্তানি ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ১২ কোটি ৭২ লাখ ডলার হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ কোটি ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অস্ট্রেলিয়া থেকে পোশাক রপ্তানি আয় ২৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে ৫১ কোটি ৬৬ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৯ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি ৪৭ শতাংশ কমে ১৮ কোটি ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৪ কোটি ১২ লাখ ডলার। রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে রাশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে। ইপিবি তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের পোশাক রপ্তানি ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯৮৭ কোটি ডলার। ইপিবি সূত্র জানায়, জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৩৪৫ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। স্পেনে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ১৭০ কোটি ডলার এবং ফ্রান্সে ৩৩ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে ১৪১ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে পোল্যান্ডে রপ্তানি ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে আমেরিকায় রপ্তানি ৪২৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাজ্যে ২৩৯ কোটি ডলার এবং কানাডায় ৭৭ কোটি ৪১ লাখ ডলারে পৌঁছেছে।