গণপতি দত্তের স্ত্রী উষা দত্ত। করেছেন দীর্ঘদিন শিক্ষকতা। বাচ্চাদের শিখিয়েছেন ন্যায়-অন্যায়। শিক্ষা দিয়েছেন ভালো-মন্দের। তবে এবার সেই শিক্ষিকাই অন্যায়ের স্বিকার হচ্ছেন ভূমিদস্যুদের।
স্বামী গত হয়েছেন বেশ আগে। ছেলে সৌমেন দত্ত দীর্ঘদিন থেকেই লন্ডনে আছেন। সেখানেই আপাতত আশ্রয় হয়েছে উষা দত্তের। বৃদ্ধ বয়সে তার সম্বল বাড়ী ও কিছু আবাদি জমি। যার দিকে চোখ পড়েছে ভূমি দস্যু দিদারুল আলমের। এতে হামলা ও মামলার স্বিকার হয়ে দেশ ছাড়া বৃদ্ধ শিক্ষিকা। পারছেন না দেশে ফিরতে।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সাজনপুর গ্রামেই উষা দত্তের বাস। নিজে লন্ডনে চলে গেলেও বাড়ীতে ভাড়াটিয়া রেখে গেছেন। তবে এখন ভাড়াটিয়াদের ও বের করে দেয়া হয়েছে বাড়ী থেকে।
গতকাল দিনের আলোতে একদল মানুষ হামলা করে উষা দত্তের বাড়িতে। বাড়ীর ভাড়াটিয়াদের উপর চড়াও হয়ে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। সবাইকে বাড়ী থেকে বের হতে বাধ্য করে। সবাই যে যার মাল জিনিস নিয়ে দ্রুতই বাড়ী ত্যাগ করে।
ভাড়াটিয়া রাম দাস বলেন, একদল মানুষ আমাদের উপর হামলা করেছে। ঘর-দুয়ার ভাঙচুর করেছে। মারধর করে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ি ওয়ালাও নেই দেশে। তাকেও হামলা করেছিল একবার, মামলা ও দিয়েছে। এই ভয়ে বৃদ্ধ মহিলা দেশে আসতে পারেন না।
জানা যায় গত বছর ৮ জানুয়ারি রাতে জমি-জমা নিয়ে কথা বলতে উষা দত্তের বাড়ীতে যান মোঃ দিদারুল ইসলাম খান, মো: খোকন (সেলিম হাওলাদার), আক্তার হাওলাদার ও আরো ৪-৫ জন যুবক। কথা বলার এক পর্যায়ে তারা উষা দত্তকে মারতে শুরু করেন। বৃদ্ধ বলেও তাদের দয়া হয়নি। দেয়ালের সঙ্গে উষা দত্তের মাথা ঠুকে দেয়। এতে তার মাথা ফেটে যায়। লাথি-ঘুষি চড় থাপ্পর তো চলেই। উষা দত্ত জ্ঞান হারালে তাকে মৃত ভেবে চলে যায় আসামীরা। জ্ঞান ফিরলে উষা দত্ত প্রতিবেশিদের ডাকলে তারাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এবার উষা দত্তকে না পেলেও তার বাড়ী ভাঙচুর ও দখল হয়েছে।তার প্রতিবেশী বিমল পাল বলেন, সরকার পরিবর্তনের পরে ভূমি দস্যুদের ক্ষমতা মনে হয় আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে দুপুরে এসে মানুষের বাড়ীতে হামলা দখল করা এটা তো আসলে মহা অন্যায়। সেটা করেও তার বহাল তবিয়াতে আছে। বৃদ্ধ শিক্ষাকে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আগে একবার বাড়িতে এসে হামলা ও করা হয়েছে। তিনি আহত হয়ে ছিলেন। ভয়ে দেশ ছাড়লেন। এবার তার বাড়িটাও দখল হয়ে গেল।আমরা নিরিহ মানুষ তাই চেয়ে দেখলাম।
লন্ডন থেকে মুঠো ফোনে উষা দত্তর ছেলে সৌমেন দত্ত বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ভূমি দস্যুরা আমার পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে আসছে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করছে। একবার আমার মায়ের উপর হামলাও করেছিল।মায়ের জীবনের শঙ্কায় তাকে এখানে নিয়ে আসি।
এবার তো আমাদের বাড়িটা ও দখল করল।
মামলা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, মামলা করার মানুষ নেই। ভাড়াটিয়ারা কেউ ভয়ে মুখ খুলবে না।
স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয় তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
আপনার মতামত লিখুন :