পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ নেওয়ায় দুই আনসার সদস্য প্রত্যাহার


বাংলাদেশের কণ্ঠ ডেস্ক প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ৮:১২ অপরাহ্ন /
পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ নেওয়ায় দুই আনসার সদস্য প্রত্যাহার

কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুই আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে রোববার কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ গ্রহণের ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন ও জেলা আনসারের কমান্ড্যান্ট রুবায়েত বিন সালাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসে একজন সেবাপ্রার্থী পাসপোর্ট করতে গেলে কতর্ব্যরত আনসার সদস্য হেলাল উদ্দিন ও আনিসুর রহমান তাকে দ্রত পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘুষ গ্রহণ করার বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান আনসার সদস্য। এ সময় ঘুষের টাকা তার কাছে পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরে হেলাল উদ্দিন ও আনিসুর রহমানকে পাসপোর্ট অফিস থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এদিকে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেন সেবাপ্রার্থীরা। তাদের অভিযাগ, কারণে অকারণে আনসার সদস্যরা ঘুষ দাবি করে বসেন। তাদের এ ধরনের আচরণে অনেকেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিনই কমবেশি বিভিন্ন বয়সী মানুষের আনাগোনা থাকে। তবে সেবা নিতে আসা লোকজনের অভিযোগ, কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে সরাসরি গেলে সেবা মেলে না। কিন্তু দালালদের অতিরিক্ত টাকা দিলেই দ্রুত মেলে কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট পাওয়ার সেবা। আর অতিরিক্ত টাকা না দিলে বা দালাল না ধরলে আবেদন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, নিজেরা পাসপোর্টের আবেদন করলে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। কিন্তু দালালদের টাকা দিলেই সব কাজ দ্রুত হয়ে যায়। এ জন্য দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। আবার কখনো দায়িত্বরত আনসার সদস্যরাও সেবাপ্রার্থীদের পাঠিয়ে দেন দালালদের কাছে। আনসার সদস্যরাও ঘুষ গ্রহণ কিরে। এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যারা পাসপোর্ট করতে আসেন তারা ভোগান্তি ছাড়াই আমাদের সেবা পেয়ে থাকেন। সরকারি নিয়ম মেনে তাদের সেবা প্রদান করা হয়। আমি কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত না। অফিসের কেউ দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুই আনসার সদস্য অনিয়ম করেছিল। তাদেরকে পাসপোর্ট অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদের চাকরি চলে গেছে। আমরা তাদেরকে আনসার ব্যারাকে পাঠিয়ে দিয়েছি।

কুষ্টিয়া জেলা আনসারের কমান্ড্যান্ট রুবায়েত বিন সালাম বলেন, কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুজন আনসার সদস্যকে সরিয়ে নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।